ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

লবণের রেকর্ড মূল্য : চাষীদের মুখে হাসি

এবছর রেকর্ড মূল্যে লবণ বিক্রি হওয়ায় এই শিল্পে জড়িতরা এখন মহাখুশীতে। চাষী,শ্রমিক এবং লবণ ব্যবসায়ীদের চোখে মুখে শুধু আনন্দ আর আনন্দ। টেকনাফের লবণ সংশ্লিষ্টদের চোখে-মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। উচ্চ মূল্যে লবণ বিক্রিতে রীতিমত রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে লবণের মূল্য উর্ধ্বমুখী থাকায় চাষী থেকে শুরু করে সবাই অধিক লাভবান হচ্ছেন। কল্পনাতীত মূল্য পাওয়ায় লবণ শিল্পে জড়িতদের ঘরে ঘরে এখন খুশীর জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।
এ বছর লবণে দাম পাওয়ায় অনেককে এখন থেকে লবণ চাষের দিকে ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে। চাষের জমি বর্গা নিতে এবং নতুনভাবে লবণের জমি তৈরীর আগাম তৎপরতা চোখে পড়ছে। আশা করা হচ্ছে,আগামী মৌসুম থেকে লবণ শিল্পে উদ্যোক্তার সংখ্যা অনেকগুণ বাড়বে। বিষয়টিকে শিল্প উদ্যোক্তারা ইতিবাচক বলে মনে করছেন। স্মরণাতীত মূল্যের জন্য লবণ চাষী এবং শিল্পে জড়িতরা বর্তমান সরকারের একটি সাফল্য হিসেবে দেখছেন। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে প্রতিমণ লবণের মূল্য পাঁচ শত বিশ টাকা। টেকনাফসহ পুরো জেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত সাদা দানাদার পরিপক্ক এই লবণের দেশজুড়ে বেশ চাহিদা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,টেকনাফের হ্নীলা, হোয়াইক্যং, সাবরাং,পৌরসভা ও সদরের কিছু এলাকায় লবণের চাষ হয়। লবণ চাষের জন্য খ্যাত শাহপরীরদ্বীপের বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনে এক হাজার একর জমিতে লবণ চাষ করা সম্ভব হয়নি। এই কারণে ওখানকার এক হাজার লবণ চাষীর অভাব অনটনে দিন কাটছে। এছাড়া জেলার মহেশখালী-কুতুবদিয়া,সদর,চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার কিছু এলাকায় লবণ চাষ হয়। এবছর জেলায় ১৮লক্ষ মে: টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
বিসিক সুত্র জানায়, চলতি মৌসুমে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে দুই হাজার আট‘শ পঞ্চাশ একর জমি লবণ চাষের আওতায় এসেছে। এখানে দুই হাজার ছয়‘শ পয়ষট্টি জন লবণ চাষী রয়েছেন। চাষী,শ্রমিক ও ব্যবসায়ীসহ প্রায় ৫হাজার পরিবার লবণ চাষে জড়িত। বিসিকের তথ্যানুযায়ী,টেকনাফে এপর্যন্ত আটষট্টি হাজার পাঁচ‘শ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। আরো সপ্তাহ খানিক সময় পেলে লবণের বাম্পার ফলন হবে। তাতে লবণ শিল্পে জড়িতরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হবে। টেকনাফের লবণ চাষী এবং ব্যবসায়ী খলিল আহমদ জানান,সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় লবণের দাম দিন দিন উর্ধ্বমুখী। তিনি বলেন,দেড় যুগের চাষ ও ব্যবসায়ীক অভিজ্ঞতায় এরকম মূল্য আর কখনো দেখিনি। হ্নীলা লবণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: ছাবের খান জানান,বর্তমান সরকারের কুটনৈতিক তৎপরতার কারণে মোটেও লবণ আমদানী হয়নি। দেশের লবণ শিল্প রক্ষায় আগামীতে সুবিধাভোগী চক্র যেন লবণ আমাদানী করতে না পারে সেদিকে নজর রাখার জন্য তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) টেকনাফ লবণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো: মিজানুর রহমান জানান, আবহাওয়া আরো কিছুদিন অনুকূলে থাকলে রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন হবে। লবণ শ্রমিক, চাষী এবং ব্যবসায়ীরা কল্পনাতীত টাকা পাবে। শাহপরীরদ্বীপের বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হলে এক হাজার জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে এবং সেখানকার এক হাজার কৃষকের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে বিসিকের এই কর্মকর্তা মনে করেন।

পাঠকের মতামত: